এরপরই বশির চাচা যোগ করলেন, ‘সব বিখ্যাত প্লেয়ারদেরই একদিন থামতে হয়। কিন্তু ধোনির অবসর আমাকে দুঃখ দিচ্ছে। অনেক পুরনো স্মৃতি মনে ভিড় করে আসছে। ধোনির মাথা উঁচু করে মাঠ থেকে সরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ধোনি কোনওদিনই এগুলো চায়নি।’
২০১১ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের সময়কার ঘটনা। মোহালিতে ভারত–পাক ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন বশির চাচা। কিন্তু টিকিট পাননি। ৬৫ বছরের ক্রিকেট ভক্তকে টিকিটের জোগাড় করে দিয়েছিলেন তৎকালীন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি।
তিন–তিনবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তারপরেও শুধুমাত্র ধোনির টানেই ভারত–পাক দ্বৈরথ দেখতে ছুটে যেতেন বশির চাচা। বলছিলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাঁচিতে ধোনির বাড়ি যাব। আগামীদিনের জন্য ধোনিকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। সঙ্গে রাম বাবুকেও নেব। তিনিও বড় ধোনি ভক্ত।’ আইপিএল দেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু এত কড়াকড়ি ও তার হার্টের সমস্যার জন্য আইপিএল দেখতে যেতে পারছেন না তিনি।
বশির চাচা বলছিলেন, টুর্নামেন্ট চলাকালীন খুব একটা ধোনির সঙ্গে তার কথা হত না। ২০১৯ বিশ্বকাপের সময় তো একটি কথাও বলতে পারেননি ধোনির সঙ্গে। কিন্তু ধোনি টিকিটের ব্যবস্থা ঠিক করে দিয়েছেন তার প্রিয় বশির চাচার জন্য। তার কথায়, ‘২০১৮ এশিয়া কাপ চলাকালীন ধোনি একদিন হোটেলের রুমে আমায় ডেকে পাঠিয়েছিল। ওর একটা জার্সি আমায় উপহার দিয়েছিল। আমার কাছে বিশেষ মুহূর্ত। আমাকে দুটি ব্যাটও উপহার দিয়েছিল মাহি। শুধু তাই নয়, আমার সঙ্গে দেখা করতে না পারলেও দলের সাপোর্ট স্টাফের হাতে আমার টিকিট পাঠিয়ে দিত।’
ধোনি ভক্ত বশির চাচা তার প্রিয় স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে কেঁদে দিলেন। একটু থেমে জুড়ে দিলেন, ‘২০১৫ বিশ্বকাপের ঘটনা। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলা দেখছিলাম। প্রচন্ড রোদ্দুর ছিল। সঙ্গে গরম। সুরেশ রায়না আমার কাছে এসে একটি সানগ্লাস দিয়ে বলল, আমি নই, ধোনি ভাই পাঠিয়েছে। আমি শুধু রায়নার দিকে তাকিয়ে হেসেছিলাম।’
বার্মিংহামের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন বশির। বলছিলেন, ‘বার্মিংহামে ভারত–পাক ম্যাচে পাক ভক্তরা আমাকে গাদ্দার (বিশ্বাসঘাতক) বলছিল। আমি গুরুত্ব দিইনি। আমি দুই দেশকেই ভালবাসি। আমার কাছে মনুষ্যত্ব সবার আগে।