স্টাফ রিপোর্ট:দক্ষিণসুরমার শিববাড়ী এলাকার ‘আতিয়া মহলে’
জঙ্গি আস্তানায় সেনা অভিযানের প্রতিশোধ হিসেবে শনিবার
সন্ধ্যায় একই এলাকার পাঠানপাড়ায় বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে জঙ্গিরা। ওই ঘটনায় আহতদের
অনেকে এমনটাই ধারণা করছেন। এদিকে পুলিশের ধারণা, জঙ্গিবিরোধী অভিযানকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই সেখানে জঙ্গিরাই বোমা হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত
চলছে। তবে এখনও কাউকে
আটক করা সম্ভব হয়নি। এদিকে, এ ঘটনায় সিলেট শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।এখন পর্যন্ত এই
বোমা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ
কর্মকর্তাসহ নিহত ৬, আহত ৩০।ধারণা করা হচ্ছে
জঙ্গিদের এই বোমা হামলা সিলেটের ইতিহাসে বর্বরতম জঙ্গিবাদ হামলা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শিববাড়ী এলাকার ‘আতিয়া মহলে’র জঙ্গি আস্তানার অভিযানকে কেন্দ্র করে সিলেট মহানগরীর চারপাশে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা প্রহরা চৌকি বসায়। এর ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে ওই এলাকায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ ও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তাই, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর পাঠানপাড়ার নিরাপত্তা চৌকির আশেপাশে উৎসুক জনতার ভিড় দিনমান লেগেই ছিল। এই ভিড় সন্ধ্যা ৬টার দিকে আরও বাড়ে যখন জানা যায়, আতিয়া মহল থেকে উদ্ধার করা লোকদের বিষয়ে সেনাবাহিনী প্রেস ব্রিফিং করতে যাচ্ছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আতিয়া মহল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যখন প্রেস ব্রিফিংটি শুরু হয় তখন পাঠানপাড়ার মসজিদের পাশের ওই প্রহরা চৌকির আশেপাশে প্রচুর উৎসুক জনতা ভিড় করে। আর এরই সুযোগ নিয়ে সেখানে এসে জনতার ভিড়ে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় আততায়ী জঙ্গি। তবে সে এই হামলায় হতাহত হয়েছে নাকি সটকে পড়েছে তা কেউ জানে না।ঠিক কী করে সে ওখানে প্রবেশ করে বোমার বিস্ফোরণ ঘটালো সে বিষয়েও ঘটনাস্থলে থাকা স্থানীয়রা ও বোমা বিস্ফোরণে আহতরা কিছুই বলতে পারেনি।
এদিকে, ঘটনাস্থলে পড়ে
থাকা মোটরসাইকেলটির আরোহীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম রহি মিয়া। এ ঘটনায় তিনিও গুরুতর আহত হয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি জানান, ওই জায়গায় ঘটনার খবর জানতে উৎসুক লোকজন ভিড় করছিল। তাদের কাছ থেকে আতিয়া মহলের ঘটনার খবর
জানতে তিনি ওখানে মোটরসাইকেল থামিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময়ই ওই বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনি পায়ে
স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। স্থানীয়দের সহায়তায় আইন-শৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকেও হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন।
বোমা বিস্ফোরণে মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ (৪৫)। তিনি জানান, দায়িত্ব পালনকালে হঠাৎ-ই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভিড়ের মধ্যে কোনও সন্ত্রাসী এ কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে তারও অনুমান।
আহত হয়েছেন আব্দুর রহিম নামের এক ব্যবসায়ী (৪০)। তিনি জানান, দুপুর থেকেই তিনি ওই এলাকার আশেপাশে থেকে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলেন। প্রেস ব্রিফিংয়ের ঘোষণা শুনে সেখানে গিয়ে হাজির হন তিনি। সেখান থেকে বের হওয়ার সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে।
জঙ্গিদের এই অপ্রত্যাশিত হামলা নগরবাসীর মনে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে।সবাই এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাপ্তি চান।সিলেট কে কলঙ্কিত করা এই সকল জঙ্গি দের কঠোর সাজা হোক।আহতরা সবাই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক আজ সমগ্র দেশবাসীর মনেপ্রাণে এই আকুতি এই ধরণের অঘটন দেশ ও জানমাল কে যাতে আর ক্ষতি না করে সবার এই প্রত্যাশা
বাংলাদেশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে।