আন্তর্জাতিক ডেস্ক:জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) সম্পৃক্ততার সন্দেহে দুই
বাংলাদেশিকে আটক করেছে
মালয়েশিয়া পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুর থেকে তাদের আটক করা হয় এবং সাবাহ প্রদেশ থেকে আরো দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের একজন
ফিলিপিনো এবং অপর
সন্দেহভাজন মালয়েশিয়ার নাগরিক বলে দেশটির সংবাদপত্র নিউ স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে।
সোমবার মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান খালিদ আবু বকর এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুই বাংলাদেশিসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
তারা ফিলিপাইনের মিন্দানাও প্রদেশ থেকে পরিচালিত একটি জঙ্গি গ্রুপে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন বলে দাবি পুলিশের। ওই জঙ্গি গ্রুপটির প্রধান মাহমুদ আহমাদ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষক।
খালিদ আরো জানান, এই গ্রুপটি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, মিয়ানমার থেকে কর্মী সংগ্রহ করে ফিলিপাইনে নিয়ে যাওয়ার রাস্তা হিসেবে সাবাহ প্রদেশকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছিল।
ওই চারজনকে আটকের তথ্য জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ফিলিপিন্সের ওই ব্যক্তি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে আইএসে জঙ্গি ভেড়াতে সাবাহ প্রদেশকে ট্রানজিট পয়েন্ট বানানোর পরিকল্পনা করছিলেন।
বাংলাদেশি ওই দুই বিক্রয়কর্মী ওই ফিলিপিনোর প্ররোচনায় পড়ে আইএসে ভিড়তে উৎসাহী হন বলে মালয়েশীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা। ওই ফিলিপিনো ঘড়ি বিক্রি করতেন। বাংলাদেশে আইএস সমর্থকদের সঙ্গে আটক দুই বাংলাদেশির যোগাযোগ ছিল বলে সন্দেহ করছেন মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান খালিদ।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ ওই সন্দেহভাজন জঙ্গিদের নাম প্রকাশ করেনি। তবে তাদের বয়স ২৭ থেকে ৩১ বছরের মধ্যে বলে উল্লেখ করা হয়।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইটস টাইমস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৩ জানুয়ারি সাবাহ প্রদেশ থেকে আটক সন্দেহভাজনদের মধ্যে একজন ফিলিপাইনের নাগরিক, আরেকজন মালয়েশীয় নারী। তারা বিয়ের বিয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ওই ফিলিপিনো নাগরিক একজন ঘড়ি বিক্রেতা। তিনিই অন্যদের জঙ্গি গ্রুপে টানতে উৎসাহিত করছিলেন বলে পুলিশ প্রধান জানান।
গত ১৯ জানুয়ারি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কুয়ালা লামপুর থেকে দুই বাংলাদেশিকে আটক করা হয়।
পুলিশ প্রধান খালিদ বলেন, ‘বাংলাদেশে আইএস-এর পরিচালিত গ্রুপের সঙ্গে আটক ওই দুই সন্দেহভাজনের যোগাযোগ থাকতে পারে।’
তবে বাংলাদেশ সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বরাবরই দেশে আইএস-এর কোনও সাংগঠনিক তৎপরতা নেই বলে দাবি করা হয়েছে।
তারা বলেন, ফিলিপিন্সে মালয়েশিয়ার সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ড. মাহমুদ আহমদের নেতৃত্বে আইএসের একটি সেল সক্রিয়। আটক ফিলিপিনো ওই মাহমুদ আহমদের হয়ে কাজ করতেন। তার দায়িত্ব ছিল ফিলিপিন্সের মিন্দানাওয়ে জঙ্গি পাঠানো।
আইএসের ফিলিপিনো ওই সেলটি সম্প্রতি সেদেশের মুসলিম বিদ্রোহী দল আবু সাহাফের সঙ্গে একীভূত হয়েছে বলে নিউ স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়।
গত বছরের জানুয়ারিতে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সন্ত্রাসী হামলার পর মালয়েশিয়া পুলিশ জঙ্গিদের ধরতে নজরদারি চালাতে থাকে। তার ধারাবাহিকতায় এই চারজন ধরা পড়লেন।
আইএস সম্পৃক্ততার সন্দেহে ২০১৩ থেকে এই পর্যন্ত আড়াইশর বেশি ব্যক্তি আটক হয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিম প্রধান এই দেশটিতে।
সূত্র: স্ট্রেইটস টাইমস, নিউ স্ট্রেইটস টাইমস।