আজকাল রিপোর্ট :
গোলাপগঞ্জে দলিল জালিয়াতি করে এক
প্রবাসীর দোকান দখলের চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এক আসামীকে জেল হাজতে
পাঠিয়েছে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নজরুল ইসলাম। গত
বৃহস্পতিবার আসামী আব্দুল আলীম উদ্দিনকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। নিজ বাড়ি
দেখাশুনার জন্য কেয়ারটেকার হিসেবে নিয়োগ করেন একই গ্রামের বাসিন্দা কলাই মিয়ার পুত্র
আলীম উদ্দিনকে।
অভিযোগে জানা যায়, চৌঘরী গ্রামের
বাসিন্দা, খন্দকার
আব্দুল মালেক সপরিবারে
যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। ঐ বাড়ি দেখাশুনার বিনিময়ে আলীম উদ্দিনকে গোলাপগঞ্জ বাজারে
প্রায় ৪ শতক ভূমির
উপর নির্মিত একটি দোকান বিনা ভাড়ায় ব্যবসা করার সুযোগ দেন খন্দকার আব্দুল মালেক।
প্রবাসী খন্দকার আব্দুল মালেকের অনুপস্থিতির সুযোগে আলীম উদ্দিন তার দখলে
দোকানকোটার একটি জাল দলিল সৃষ্টি করে। ২০১৫ সালে খন্দকার আব্দুল মালেকের
প্রবাসী ছেলে সালাহ উদ্দিন দেশে এসে আলীম উদ্দিনের দখলে থাকা ভূমিতে একটি
বহুতল ভবন নির্মানের উদ্যোগ নেন। এজন্য তিনি আলীম উদ্দিনকে তার ব্যবসা
সরিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু নানা টালবাহানা করে আলীম উদ্দিন দোকানটি জবর
দখল করে রাখে। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে গোলাপগঞ্জ
পৌর মেয়র সিরাজুল জব্বার চৌধুরীর দ্বারস্থ হন খন্দকার আব্দুল মালেক ও তার
পরিবার।
পৌর মেয়রের ডাকে তার কাছে
উপস্থিত হয়ে আলীম উদ্দিন দাবী করে প্রবাসী বৃদ্ধ খন্দকার আব্দুল
মালেক ঐ দোকানটি জায়গাসহ তার কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন এবং এর পক্ষে ২০১৬ সালের
একটি দলিল প্রদর্শন করে আলীম উদ্দিন। এ ধরনের ভিত্তিহীন দাবী শুনে
স্তম্ভিত হয়ে পড়েন খন্দকার আব্দুল মালেক।
তিনি গোলপগঞ্জ উপজেলা
সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে ঐ দলিলের জাবেদা নকল সংগ্রহ করে নিশ্চিত
হন উক্ত আলীম উদ্দিন অন্য ব্যক্তিকে খন্দকার আব্দুল মালিক সাজিয়ে তার
স্বাক্ষর জাল করে ঐ দলিল সম্পাদন করেছেন। অথচ,
৮৪ বছরের বৃদ্ধ
খন্দকার আব্দুল মালেকের হাত কাঁপে বলে দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিজ নাম স্বাক্ষর করতে পারেন
না। এমনকি, চেক
বইয়ে স্বাক্ষর করতে না পেরে তিনি টিপসই দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন।
এ ঘটনায় খন্দকার আব্দুল মালেক
নিজে বাদী হয়ে ঐ জাল দলিল বাতিলের জন্য সিলেটের আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা করেন
এবং ঐ দলিল জালিয়াতির অভিযোগে সিনিয়র
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে একটি আরেকটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন। ঐ জালিয়াতির
মামলায় কথিত দলিল সৃষ্টিকারী আলীম উদ্দিনসহ ৫ জনকে আসামী করা হয়।
মামলার প্রেক্ষিতে আসামীরা গত
বৃহস্পতিবার সিলেটের সিনিয়র জুডিনিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে আত্মসমর্পন করলে আদালত অন্যদের জামিন
দিলেও প্রধান আসামী
আলীম উদ্দিনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
প্রবাসী পরিবারের অভিযোগ দেশের
অগ্রগতিতে সব সময়ই প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। কিন্তু তারা
কষ্টার্জিত অর্থ দেশে বিনিয়োগ করে শান্তিতে থাকতে পারছেন না। অনেক অসাধু মহলের
নানা অপৎপরতা প্রবাসীদের বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করছে। তাই তারা প্রবাসীদের
সার্থ সংরক্ষণে সরকারও দেশের মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে।